Tuesday 15 May 2018

এরই নাম ভালোবাসা

Leave a Comment
                       এরই নাম ভালোবাসা

    মেয়েটার মাথা কি খারাপ হয়ে গেল নাকি ?? ও এমন ভাল আচরণ করছে কেন ? কথা গুলো ভাবতে ভাবতে শিমুল ঘড়ির দিকে তাকালো।ওহ! দেরি হয়ে যাচ্ছে !!অফিস যেতে হবে। তাই সাত পাঁচ না ভেবেই হন্য হয়ে ছুটল অফিসের দিকে।রাস্তায় জ্যাম পরলে অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাবে ...
গাড়িতে উঠতেই নিলান্তির হাসিমাখা মুখ ভেসে উঠলো শিমুলের মনে। নাহ !! হাসিটা তেমন একটা খারাপ না। কেমন যেন হৃদয়ে কাপন ধরায়... তবে এই মেয়ে তো ওর সাথে এমন করে হাসার কথা না। ও যতদূর জানে মেয়ে অনেক রাগি... এমন সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতেই শিমুল অফিস এ পৌঁছে গেল।
.............................. .........................................
শিমুল যখন বাসায় ফিরল ঘড়িতে সময় রাত ৯টা। প্রতিদিন সন্ধ্যা হতেই বাসায় এসে পরে কিন্তু আজ অফিসে বড় স্যার এসেছিল তাই দেরী। শিমুলের শরীর খুব খারাপ লাগছে কিন্তু তবুও মন অনেক ভাল আজ স্যার ওর কাজে অনেক খুশি হয়েছে । এসব ভাবতে ভাবতেই হুট করে দরজায় কড়া
নাড়ার শব্দ শুনতে পেল শিমুল ।। দরজা খুলতেই দেখতে পেল হাতে একটা বাটি নিয়ে বাড়িওয়ালার মেয়ে নিলান্তি দাড়িয়ে আছে।
- আপনি ?
- হ্যা আমি। কেন আসতে মানা নাকি ???
- আরে না না।
- কি অভদ্র রে বাবা !! একবার বাসার ভিতরে     ঢুকতে ও বলে না(মনে মনে)
... আমি কি দরজায় দাড়িয়ে থাকবো নাকি???
- না ইয়ে মানে !!
- মানে মানে করতে হবে না। এটা আমার বাসা !! আমি এখন থেকে প্রতিদিন আসবো।
কথাটা শুনেই শিমুল অবাক হয়ে গেল। ও বুঝতে পারল না নিলান্তি এসব কি বলছে। এটা ওর বাসা কিভাবে ... ভাবতে ভাবতেই দেখতে পেল নিলান্তি ওর বাসার ভিতরে ঢুকে টেবিল এ খাবার সাজাতে শুরু করেছে।
- এই যে আমার বাসা বলেছি বলে আবার অন্য কিছু মনে করবেন না। আপনি আমাদের বাসায় ভাড়া থাকেন সেই হিসাবে তো এই পুরা বাসাটাই আমার তাই না???
- হ্যা অবশ্যই আপনারই তো বাসা।
- তাহলে তো আমি প্রতিদিন আসতে পারি তাই না।
- সেটা কি খুব ভালো দেখাবে ???
- ভালো দেখাবে নাকি খারাপ দেখাবে সেটা আমি বুঝবো। আপনার এত চিন্তা করতে হবে না। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন নাহলে পরে আবার ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।আর হা খাবার কিন্তু আমি রান্না করেছি। কেমন হয়েছে বলবেন কিন্তু।
খারাপ হলেও ভালো বলবেন নাহলে আপনার খবর আছে।
...
কথাটা বলেই নিলান্তি ঘর থেকে বের হয়ে গেল আর
শিমুল অবাক দৃষ্টিতে নিলান্তির চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল ...
..................... ...........................
- হ্যালো।
- হ্যালো ... কে বলছেন ?
- আজকে গান গাইবেন না ? আমি অনেকক্ষণ ধরে আপনার গান শুনার জন্য অপেক্ষায় আছি।
- কে আপনি আর আমার গান বা আপনি কিভাবে শুনেন ???
- ওই পোলা আমি কে সেটা জেনে কি করবেন। গান গাইতে বলেছি গান গাইবেন এত কথা কিসের আর মেয়ে মানুষের কণ্ঠ শুনলেই কথা প্যাঁচাতে ইচ্ছে করে তাই না ...???
আর ৫ মিনিটের মধ্যে যদি গান না শুনি তাইলে কিন্তু ...
- আগে বলুন কে ... হ্যালো হ্যালো ...
শিমুল ফোন হাতে নিয়ে দেখতে পেল লাইন কেটে
দিয়েছে। নাম্বার দেখে ও চিনতে পারলো না কে এই
মেয়ে আর ওর গান বা মেয়েটা কিভাবে শুনে ।।
প্রায় এক বছর পর ও গতকাল গান গাওয়া শুরু করেছে আর এর মধ্যে এই মেয়ে ওর গান শুনেও ফেলেছে। আজ থেকে এক বছর আগে ওর বাবা ওকে এই গানের জন্যই ঘর থেকে বের করে দিয়েছে । কারন বাবা চাইত শিমুল তার ব্যবসা দেখুক, কিন্তু শিমুল চাইত গান গাইতে।এ নিয়ে বাবা ও তার মাঝে একদিন ঝগড়া হয়।ফলসরুপ তাকে বাসা থেকে বের করে দেয় বাবা। সেই থেকে শিমুলকে এই বাসাতেই আছে।
............... .................................
আমাদের আরও সুন্দর সুন্দর গল্প ও কবিতা পড়তে এখানে ক্লিক করুন 
যদি আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তো এখানে ক্লিক করুন

শিমুল দাড়িয়ে আছে ছাঁদে । বিকাল হলেই ও এই ছাদে আসে। ছাঁদে আসলে ওর মন কেমন যেন ভালো হয়ে যায়। মাঝে মাঝেই ইচ্ছে হয় ছাঁদে বসে গীটার নিয়ে গান গাইতে তবে কেন যেন সাহস হয়ে উঠে না।
অবশ্য ওর বাড়িওয়ালা বেশ ভালো । ওর সাথে সবসময় হাসিমুখেই কথা বলে তবে শিমুলের ভয় ওনার মেয়েটাকে। কেমন যেন বদরাগী আর প্রায় সময়ই চিল্লাচিল্লি করে যা ওর বাসা থেকেই শুনা যায় ...
- এই যে ছাঁদে কি???
যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয় কথাটাকে সত্যি প্রমান করে দিয়ে শিমুলের সামনে দাড়িয়ে আছে নিলান্তি।
শিমুল আমতা আমতা করে বলল -
- নাহ মানে ...
- কি মানে মানে করছেন। বলুন ছাঁদে কি???
বাবা আপনাকে বলেনি ছাঁদে আসা নিষেধ। এই ছাঁদ আমার আর এখানে শুধু আমি আসবো।
- নাহ তেমন কিছু তো বলেনি।
- আচ্ছা বাবা বলেনি আমি বলে দিলাম এখন যান আর যেন ছাঁদে না দেখি।
- জি আচ্ছা।
- আর হা শুনুন গান টান গান নাকি আপনি ???
- জি একটু একটু।
- ওহ আচ্ছা তাহলে কাল রাতের ওই বিশ্রী কণ্ঠের গান আপনি গাইছিলেন ...??? বুঝলেন সব কিছু সবাইকে দিয়ে হয় না। তেমন আপনাকে দিয়ে গান হবেনা ... শেষে আবার আমাদের বাসার কুকুরটা ভয়ে পালাবে ...
কথাটা শুনে শিমুলের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসতে চাইল। ও অনেক কষ্টে সেগুলো থামিয়ে রেখে মৃদুস্মরে বলল -
- আচ্ছা আর গাইবনা। আমি আসি।
শিমুল আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে আসতে লাগলো ... ঘরে ঢুকতেই ওর মোবাইল বেজে উঠলো। ... হাতে নিয়ে দেখতে পেল কালকের সেই অপরিচিত নাম্বার।
- হ্যালো!!
- হা হা হা ।। কেমন লাগলো ঝাড়ি???
- আপনি !! মানে আপনি !!
- আপনি আপনি করছেন কেন??? কি আমি।
- কিছুক্ষণ আগে ঝাড়ি দিয়ে এখন আবার বলা হচ্ছে কেমন লাগলো।
- আমি আপনাকে ঝাড়ি দিতে যাব কেন ??? আপনাকে তো ঝাড়ি দিয়েছে নিলান্তি আপু।
- তাইলে আপনি কে ? আর আপনি বা কিভাবে দেখলেন ???
- আমি কে সেটা বলবো না। তবে হা আপনার কাঁচুমাচু মুখ দেখে বেশ মায়ায় লেগেছিল ... আহারে বাবুটা।
- এই দেখেন??? দেখেন মজা নিবেন না। আপনি নিলান্তি আমি জানি।
- আমি নিলান্তি হতে যাব কোন দুঃখে। রাখি আর হা আজ রাতে গান গাবেন কিন্তু আমি অপেক্ষায় থাকবো ...
- হ্যালো , হ্যালো।
শিমুল বুঝতে পারল না কে এই মেয়ে। শিমুল জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাল। দেখতে পেল পাশের বাসার একটা মেয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে আর মেয়েটার হাতে মোবাইল। তবে কি এই মেয়েই সেই মেয়ে যে ওকে ফোন দেয় নাকি এটা নিলান্তি ???
.



Our others topics:

If You Enjoyed This, Take 5 Seconds To Share It

0 comments:

Post a Comment

Thank you so much for commenting , we hope you don't face any problem . Please subscribe 🙏 ....... If you are interested to write your story or poems , please email us