Sad love story ( ভালোবাসার গল্প )


            Sad love story  ( ভালোবাসার গল্প )


১৬ টা হাড্ডি ভেঙেছে ,৩জায়গাতে চাকু মেরেছে,২টা গুলি করেছে এখন আবার আমার পাশে বসে কান্না করছে।হাসপাতালের ICU তে মৃত্যুর সাথে লড়তে লড়তে এখন হাসতে ইচ্ছা করছে।
কয়েক দিন আগে
দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কের পর অবনী যখন ফোন দিয়ে বলল কাল ওর বিয়ে তখন আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি কোন একটা দুঃস্বপ্ন দেখছি।কি করব কিছুই বুঝছিলাম না।অবনীকে আমার কাছে চলে আসতে বললে ও আমার বেকারত্বের কথা মনে করিয়ে দিল।তাছাড়া যার সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে সে বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মালিক আর আমি সবে CSE থেকে পাশ করা বেকার।তাই অবনীর পক্ষে আমার কাছে আসাটা হয়ত কোন ভাবে অসম্ভব।সেদিন সারা রাত জেগে বসে রইলাম।কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম পরিস্থিতিকে।এক কথায় বললে পাগলের মত হয়ে গেছিলাম।তখন আমার কিছু বন্ধু জানাই নতুন সংসারে খুবই সুখে আছে সে।তবে তার স্বামীর বয়স তার ২ গুন।তখন আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে টাকার জন্য বিয়ে করেছে অবনী।যেহেতু আমি বুয়েটের ছাত্র তাই এত দিন আমার মাঝে প্রফিট দেখেছিল মেয়েটা।কিন্তু আগে থেকেই যদি প্রফিট টা পেয়ে যাবে তবে আর আমি কেন।তখন থেকে মেয়েদের চরিত্র বুঝতে বাকি রইল না আমার।তাই গ্রামে মাবাবার কাছে চলে আসি।নিজেকে অদৃশ্য জালে আটকে রাখলাম।মা ব্যতীত অন্য কোন মেয়েকে বিশ্বাস করতাম না।আর সব সময় নিজেকে ঘরে আটকে রাখতাম।যে আমার জীবন ছিল দুষ্টামি, বাদরামী ভরপুর তার জীবন হয়ে গেল মেঘলা আকাশ।আমার এই অবস্থা দেখে মাবাবা খুব ভেঙ্গে পড়ল।অনেক বোঝানোর পর তারা আমাকে নতুন করে শুরু করতে রাজি করাল।অবশেষে তাদের কথাই আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে অ্যাপলাই করি ও আমার চাকরিটা হয়েও যায়।১ম দিন চাকরিতে গিয়ে নিজের সব কাজ ভালো করে বুঝে নেই।তারপরই ঈদের ছুটি হয়ে যাই।এই ছুটিতে মা বাবা আমাকে না জানিয়ে অনার্স ২য় বর্ষের এক ছাত্রীর সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলে।বিয়ের আগের দিন রাতে ঘটনাটি তারা আমাকে জানাই।মেয়েটির নাম এনা।আমি যখন জানতে চাইলাম মেয়েটি আমার সম্পর্কে সব কিছু জানে নাকি তখন মা বলল মেয়েটি এ বিষয়ে কোন কিছু বলে নি(ছেলে দেখা/তার অতীত )।ছেলে না দেখে বিয়েতে রাজি হয়েছে শুনে আমি একটু অবাক হই কিন্তু সম্ভবত বিয়ে সম্পর্কে উদাসীনতার কারণে তা বৃদ্ধি করি না।অবশেষে আমাদের বিয়ে হয়ে যাই।রাতে বাসর ঘরে প্রবেশ করে দেখি এনা বিছানার উপর বসে আছে।যেহেতু আমাদের আগে কথা হয়নি তাই আমি একটু বিব্রত বোধ করছিলাম।তবু আস্তে আস্তে মেয়েটার দিকে এগোলাম।আমার এগোনো দেখে হঠাৎই এনা উঠে দাঁড়াল এবং একটা নেইল কার্টার সাইজের চাকু আমার দিকে ধরল।আমি একটু অবাক হলাম এবং হেসে উঠলাম।আমার হাসা দেখে এনা একটু ঘাবড়ে যায়।আমি তখন মজা করে বলি এই দুই ইঞ্চি চাকু তোমাকে রক্ষা করতে পারবে না সুন্দরী।আজ কেউ তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।তাই বলে আরও জোড়ে হাসতে শুরু করলাম।এবার মেয়েটা একটু ভয় পেল।মনে হচ্ছে সে এবার কান্না শুরু করে দিবে।তাই আমি ভাবলাম এবার বুঝি মান সম্মান গেল ।তাই হাসি থামিয়ে ওকে বললাম
আ:sorry, আসলে আমি মজা করছিলাম।
(Sorry শুনে একটু অবাক হলেও চাকুটা আমার দিকে ধরে রাখল)
আ:দেখুন এভাবে কোন সমস্যার সমাধান হবে না।তার চেয়ে আপনি বলুন সমস্যা টা কি??
এনা:আসলে আমি আরেক জনকে ভালবাসি।আর....
আমি :(থামিয়ে দিয়ে )আর বলতে হবে না।তা বিয়েটা করলেন কেন।আমি যত দুর জানি আপনার বাবার হার্ট প্রবলেম নাই ।
এনা:আসলে প্ল্যান ছিল বিয়ের রাতে পালানোর ।কিন্তু বাবার কড়া পাহারার কারনে হল না।
আমি:বুঝলাম ।
এনা: দেখুন আপনাকে তো ভালো মনে হচ্ছে।plz আমার কোন ক্ষতি করবেন না।
আমি :পাম কম দেন।আপনি আপনাদের প্রেমের বলি হিসাবে আমার সম্মান টা বেছে নিয়েছেন।আর আমাকে বলছেন সাহায্য করতে।
এনা:তার জন্যে ক্ষমা চাচ্ছি।plz help us.
আমি : (আবার মজা করে ) তা হবে না আমি আমার অধিকার চাই ।
এনা:এবার সে কেদেই ফেলল।আর বলল তাইলে আমার মৃত্যুর জন্য আপনি দায়ি থাকবেন।
আমি : অবস্থার গুরুত্ব বুঝে মজা করা বাদ দিয়ে বললাম অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ুন।
আমি বালিশটা নিয়ে সোফাতে ঘুমাতে গেলাম।সোফাতে শুয়ে ভাবতে লাগলাম ভালই হয়েছে আমার পক্ষে আবার কোন মেয়েকে বিশ্বাস করা সম্ভব ছিল না।এভাবে একসময় ঘুমিয়ে পড়ি।সোফাতে আগে কখনো শুইনি তাই মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছিল এবং দেখতে পেলাম এনা চাকুটা নিয়ে বিছানার উপর সতর্ক ভাবে বসে আছে।সকালে এনার ডাকে ঘুম ভাঙলো।ও আমাকে বিছানাতে ঘুমাতে বলল।আমি ভাবলাম সকালে কেউ এসে আমাকে এখানে ঘুমানো দেখলে বিষয়টা ভাল হবে না ।তাই বিছানাতে ঘুমাতে গেলাম।কিন্তু দেখি বিছানা এলোমেলো।বুঝলাম এ মেয়ে পাক্কা শেয়ানা আর এসব হয়ত কাল রাতে অসভ্যতামী না করার প্রতিদান।তবে তাতে আমার কিছুই যাই আসে না ।কারণ জীবন থেকে মেয়ে শব্দটা আগেই বাদ দিয়েছি।বিয়েটা করেছি মাবাবার জন্য।
আমাকে ডেকে দিয়ে এনা বাথরুমে চলে যাই।(বলে রাখা ভাল যে আমাদের বাড়ি গ্রামে হলেও ৩তলা ঘর আমাদের আর সব গুলো ঘর বাথরুম আটাচমেন্ট।আর আমরা জয়েন্ট ফ্যমেলি)।কিছুক্ষণ পর দরজাতে প্রচন্ড শব্দ শুনতে পেলাম এবং লাফিয়ে উঠলাম।কিছুক্ষণের জন্য মনে হচ্ছিল ঘরে ডাকাত পড়েছে।কিন্তু অবস্থা অনুকূলে এলে বুঝলাম ডাকাত না চাচত ভাইদের ডাকাতিনী গন।এনাও তখন ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসেছে ।ও গিয়ে দরজা খুলল।ভাবিরা ঘরে ঢুকে আমাকে ঘিরে ধরল আর আমার ফাজিল বোনটা এনাকে ধরে রাখল।ভাবীরা আমাকে কিছুক্ষণ দেখল যেন আমি কোন মারাত্মক অপরাধী আর এরা তদন্তকারী CID অফিসার।কিছুক্ষণ পর বলল চোখ দুটো এত লাল কেন ।রাতে ঘুমানো হয়নি বুঝি ।আর সবাই হেসে দিল।তারপর এনার দিকে তাকিয়ে বলল একরাতে ছেলেটা কেমন শুকিয়ে গেছে ।একটু ভাল করে খেতে দিয়।আরও এই জাতীয় মজা করল তারা।আমি তখন বিরক্ত বোধ করছিলাম তাই জোর করে বাইরে পাঠিয়ে দিলাম।তারা তাদের মত ভেবে নিয়ে চলে গেল ।আমি তারপর ফ্রেশ হয়ে নিয়ে হালকা নাস্তা সেরে বাইরে চলে এলাম।অনেক দিন পর স্থানীয় বন্ধুদের সাথে দেখা তাই তাদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম।তারা কয়েকবার আমার বিয়ের ব্যাপারটা তুললেও আমার নিরুৎসাহের জন্য সব চাপা পড়ে গেল ।প্রায় বিকালের দিকে বাসাই এসে গোসল খাওয়া শেষে আবার বের হলাম ।সর্বশেষ রাতে আবার বাসাতে এলাম।সারা দিন বাসাতে না থাকায় মা একটু রাগ করল।কিন্তু যখন আমি বললাম আমি কাল চলে যাব তখন মা একটু মন খারাপ করলেও যাবার অনুমতি দিল।তারপর পর ঘরে গিয়ে দেখি এনা বসে বসে ফোনে কথা বলছে।আমাকে দেখে কথা বলা বাদ দিল।আমি ওকে কাল যাবার কথা বললাম এবং পরের দিন দুজনে ঢাকা চলে আসি..........
#2
ঢাকাতে আমাদের নিজস্ব ফ্ল্যাট থাকাতে খুব একটা সমস্যা হবার কথা ছিল না।কিন্তু না আমার জীবন স্বাভাবিক ছিল না এনার।যাই হোক ঢাকাতে পৌঁছে মাকে খবর দিলাম।মা এনার প্রতি নজর রাখতে বলল।অনেক দীর্ঘ জার্নির কারনে একটু ক্লান্ত ছিলাম।তাই এনাকে বললাম এখনকার মতো সোফাতে শুতে পরে আপনার একটা ব্যবস্থা করে দিব।তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম।প্রায় ৩ ঘন্টার ছোট ঘুম শেষে দেখি এনা আমার পাশে ঘুমিয়ে রয়েছে।ওকে ঘুমাতে দেখে আর ডাকলাম না।ফ্রেশ হতে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি এনা ঘুম থেকে উঠেছে।
আমাদের আরও সুন্দর সুন্দর গল্প ও কবিতা পড়তে এখানে ক্লিক করুন 
যদি আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তো এখানে ক্লিক করুন

এনা : আসলে খুব ক্লান্ত ছিলাম আর আমার বিছানা ছাড়া ঘুম আসে না।তাই আপনার পাশে শুয়ে পড়েছিলাম।কিছু মনে করবেন না
আমি :আচ্ছা ।সমস্যা নেই।
আমি :আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন।আমি বাইরে থেকে কিছু কিনে নিয়ে আসচ্ছি।
এনা:একটু তাড়াতাড়ি আসবেন প্লিজ
আমি একটু অবাক হয়ে তাকালাম
এনা : আসলে আমি একা থাকতে ভয় পাই।
আমি :ঠিক আছে ।
কিছুক্ষণ পর খাবার নিয়ে আসলাম।এসে দেখি ও ফোনে কথা বলছে।আমাকে দেখে কথা বলা বাদ দিল।আমি ওকে খেয়ে নিতে বললাম।কারন ততক্ষণে অনেক রাত হয়ে গেছে।ও খেতে চলে গেল।কিছুক্ষণ পর আমি ওকে বললাম পাশের রুমটা ফাঁকা আছে ।আপনি ওখানে থাকবেন।আর নিজে থেকে রুমটা পরিষ্কার করে নিবেন।অনেক দিন কেউ ব্যবহার করেনি তো তাই।যেহেতু কাজের চাপ নেই তাই এরপর আমি আমার personal library তে চলে আসলাম।কিছুক্ষণ পর দেখি এনা দরজার পাশে দাড়িয়ে রয়েছে।আমি ভেতরে আসতে বললাম।ও ভেতরে এসে একটা চেয়ারে বসল।আমি পড়াতে মন দিলাম।কিছুক্ষণ পর দেখি এনা আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেন কিছু বলবে।
আমি :কিছু বলবেন।
এনা :বাসাটা খুব সুন্দর।খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে সব কিছু।বিশেষ করে আপনার রুমের পাশের রুমটা।যেন কেউ খুব সুন্দর করে ভালবাসা দিয়ে সাজিয়েছে রুমটা।
আমি:হম।
এনা : আচ্ছা রুমটা কি আপনি সাজিয়েছেন?আর সাজিয়ে রেখেছেন কেন?ব্যবহার করেন না কেন?
আমি :আমি সাজাইনি।
এনা : তাহলে
আমি : ধমকের সুরে সব কিছু আপনার জানতে হবে না।
এনা:ধমকাচ্ছেন কেন।কিছু গোপন করছেন বুঝি ।gf????
এবার আমি কিছু না বলে চুপ করে বসে থাকলাম।আসলে রুমটা অবনী সাজিয়ে ছিল ওর মনের মত করে।কিন্তু যখন ওর বিয়ে হয়ে যাই তখন থেকে আমি রুমটা তালা দিয়ে রাখি।যেন অবনীর স্মৃতি গুলোকে আটকে রেখেছি রুমটাতে।
আমার চুপ থাকা দেখে এনা আর কিছু বলল না।কিছুক্ষন চুপ থেকে ....
এনা: আসলে আমি একটু কম সাহসী।অন্যদিক দিয়ে আমি খুব সাহসী হলেও একটু ভূতে ভয় পাই।
আমি :একটু? ?তাহলে সমস্যা নেই ।অভ্যাস হয়ে যাবে।
এনা :আসলে একটু বেশি।
আমি :বুঝলাম ।তো আমি কি করতে পারি ।তাছাড়া এ বাসা সম্পর্কে কোন ভৌতিক গল্প নেই।আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।
এনা :তবু যদি আপনি আমার রুমে থাকতেন।
আমি :আমি সোফাতে ঘুমাতে পারি না।
এনা : আমি নিজে বিছানা করে নেব সমস্যা নেই।
আমি :যদি রাতে আপনার উপর এট্যাক করি।
এনা : আপনার বোন ভাবীদের কাছে যতটুকু শুনেছি আপনি তা করবেন না ।তবু যদি কিছু করেন তবে সুইসাইড করব।
আমি :অপনাদের ভালবাসার প্রতি তো আমার ডাওট হচ্ছে।জীবনের মূল্যনেই যার কাছে সে কাউকে ভালবাসতে পারে না ।যাই হোক সেটা আপনাদের ব্যাপার।
এনা : খুব ভালবাসাবাদী দেখছি।কয়টা প্রেম করেছেন? ?
আমি :আমি..... ( অবনীর কথা বলতে গিয়ে চুপ করে গেলাম )সেটা আপনার জানার বিষয় না।
এনা :আমার মনে হচ্ছে আপনি কিছু লোকাচ্ছেন ।আরে বলুন না ।
এমন সময় এনার ফোন বেজে উঠল।ও নম্বরটা দেখে আমার দিকে তাকাল তারপর কেটে দিল ।
আমি : আমার জন্য কেউ সমস্যাতে থাকুক তা আমি চাই না ।তবে এসব আমার পছন্দ না।তাই তাকে বলবেন কয়েক দিন ফোন কম করতে।সকাল ১০ থেকে বিকাল ৪ এর মধ্যে ফোন দিতে ।
এনা :ঠিক আছে ।
আমি :অনেক রাত হয়েছে আমি ঘুমাতে যাচ্ছি ।আর আমি নিজে ঘুমাবানে।আপনি বিছানাতে ঘুমাতে পারেন।
এনা :আচ্ছা(একটু খুশি হয়ে )
কিছুক্ষণ পর দুজনে শুয়ে আছি ....
আমি :আপনি কোন কলেজে পড়তেন।
এনা : ঢাবিতে ।
আমি :পড়াশুনার ইচ্ছা আছে ।
এনা :খুব।
আমি :ঢাবিতে আমার কিছু চেনা শুনা আছে।কাল আপনি হোস্টেলে সিটের জন্য apply করবেন।
এনা : আমার কাছে তো টাকা নেই ।আর বাবার কাছে চাইলে দেবে না ।অন্যদিকে রাছু(এনার bf ) বেকার।
আমি :সম....বলার আগেই এনা বলল:আচ্ছা বাবার কাছে যদি বলি আপনি যৌতুক চাইছেন।তাইলে মনে হয় দিবে।
আমি :কি?
এনা :চিন্তা করেন না।আপনারও ভাগ থাকবে।
আমি:হে বুদ্ধির জাহাজ আপনি প্লিজ কিছু ভেবেন না।আমি আপনার টাকা দিব।
এনা :সত্যিই ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমি : টাকাটা ধন্যবাদ পাবার জন্য দেই নি ।
এনা :তবে।
আমি: আপনাকে আমার কিছু কাজ করতে হবে ।
এনা : ভয় পেয়ে কি কাজ।
আমি :(মজা করে ) বোঝেন না ।একা একা এত বড় বাসাতে থাকি।তাও আবার যুবক।আর আপনি মাশাল্লাহ কম না।তাই মাঝে মাঝে ...মাঝে মাঝে
এনা : মাঝে মাঝে ..মাঝে মাঝে ।
দেখেন আমি কিন্তু ও ধরনের মেয়ে না।
আমি : হেসে উঠে ।ভয় পাবেন না ।মাঝে মাঝে আমার মায়ের সাথে বউমা হয়ে কথা বলতে হবে।
এনা : জোরে হাসতে হাসতে ।আপনাকে দেখে মনে হয় না আপনি এত বড় ফাজিলের ডিব্বা।ঠিক আছে আমি রাজি ।আচ্ছা আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি ।
আমি :না।
এনা :কেন?
আমি কিছু না বলে চুপ থাকলাম।ও উত্তর না পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
এর কিছু দিনের মধ্যেই ওকে হোস্টেলে পাঠিয়ে দিলাম।মাঝে মাঝে কনফারেন্স কলের মাধ্যমে ওর সাথে মায়ের কথা বলিয়ে দিতাম।কখনো ওর বাবার সাথে কথা বলতে হত।আর মাস শেষে টাকা পাঠিয়ে দিতাম।এছাড়া আমরা কখনো যোগাযোগ রাখতাম না।মা মাঝে মাঝে যেতে বললেও কাজের চাপ বলে এড়িয়ে যেতাম।এভাবে কেটে গেল ৬ মাস।আমার কাজে প্রমোশন হল।আমি AMD হলাম।এত দ্রুত প্রমোশন পেয়ে অবাক হয়েছিলাম খুব। অন্যদিকে আমাদের MD চেঞ্জ হল।MD আসার দিন তাই সব দায়িত্ব আমার উপর পড়ল।আমি ও বেশ ভালো ব্যবস্থা করলাম।কিন্তু MD কে শুভেচ্ছা দিতে গিয়ে দেখি আমাদের নতুন MD আর কেউ নয় সে হচ্ছে অবনী ।আর এটা তার স্বামীর কোম্পানি।ওকে দেখে অবাক হলেও প্রকাশ করলাম না।অন্যদিকে অবনীর ব্যবহারে খুব একটা অবাক হওয়া দেখলাম না।তবুও আমি একটু অস্বস্তিতে দিন কাটচ্ছিলাম।শত অনিচ্ছা সত্ত্বেও সব সময় ওর সাথে থাকতে হত কারণ আমি ছিলাম ওর ASSISTANT. এর মধ্যে কোম্পানির একটা বিদেশে টুর পড়ল।আমাকে আর অবনীকে যেতে হল সেখানে ।১ম দিন খুব কাজের চাপ থাকায় খুব একটা কথা হল না।কিন্তু ২য় দিন..........
#3
এনাকে হোস্টেলে পাঠানোর পর কিছু দিন ওকে মিস করি।আসলে একসাথে থাকাতে একটু মায়া জন্মে ছিল ওর উপর।তবে এটা যে ভালবাসা না তা আমি জানি।কিছুদিনের মধ্যেই নিজেকে কাজে ডুবিয়ে ফেলি।অবনী আমাদের নতুন বস হবার পর কাজ টা যেন আরও বের গেল।সব সময় ওর সাথে থাকতে হত।ওকে সাহায্য করতে হত।তবে আমি কখনো এমন কোন কাজ করিনি যা আমাদের অতীতকে মনে করিয়ে দেই।মাঝে মাঝে অবনী কিছু বলতে চাইলেও কাজের বাইরে কোন কথা বলার সুযোগ দিতাম না ওকে।এরই মধ্যে আমাদের বিদেশে ট্যুর পড়ল।১ম দিন আমাদের তেমন কথা হলো না।কিন্তু ২য় দিন কাজের চাপ কম ছিল।তাই আমি আমার রুমে পরের দিনের প্রোজেক্ট রেডি করছিলাম।এমন সময়ে অবনী আমার রুমে নক করলো।আমি দরজা খুলে দেখি বাইরে অবনী।
আমি : কিছু বলবেন ম্যাডাম ।
অবনী : প্রহসন করছ।
আমি :ক্ষমা করবেন, আমি আপনার কোম্পানির চাকর মাত্র।মালিকের সাথে প্রহসন করব এতটা সহসী নই।
অবনী:হম।ভেতরে আসতে বলবে না ।
আমি : আসুন ।
অবনী : শুনলাম বিয়ে করেছ?
আমি : জী।
অবনী : নাম কি?
আমি :এনা।
অবনী :আমার কথা বলেছ ওকে।
আমি : স্ত্রীকে বসের নাম বলাটা প্রয়োজন মনে করি না ।
অবনী : এখানো পাল্টাও নি।
আমি :কালকের প্রেজেন্টেশন প্রায় কমপ্লিট।আপনি চিন্তা করবেন না ।আর স্যারের সাথে কথা হয়েছে।আপনার ফোন বন্ধ পাওয়াই আমাকে ফোন দিয়েছিল।
অবনী : রজত ফোন দিয়েছিল।কি বলল না বুড়োটা?
আমি : স্যার আজ বিকালে আসছেন।
অবনী : একটুও শান্তি দিল না আমাকে।ও আস্তে আস্তে কোথা থেকে ঘুরে আসি?
আমি :ক্ষমা করবেন আমি এখানে কোম্পানির হয়ে এসেছি।কারও বডির্গাড হয়ে নয়।
অবনী : (হাসতে হাসতে ) দেখা যাবে।
ঐ দিন বিকালে অবনীর স্বামী রজত আসে।আগে মাত্র দুবার দেখা হয়েছে আমার আর রজত স্যারের।৫০ উর্ধ্বে বয়সী লোক।শরীরের দূর্বলতা মুখে ভাসমান।তবে হাস্যরসময় ব্যক্তি।স্যার আসার পর অবনী আমার সাথে অবনীর বন্ধুত্বের(classmate)কথা স্যারকে জানাই।তরুণী স্ত্রীর পুরাতন classmate পেয়ে স্যার একটু অখুশি ছিল ।তবে খুব একটা প্রকাশ করল না।অবনীও আমার সাথে কম কথা বলতে শুরু করল ।আর আমি যেন স্বস্তি পেলাম।২ দিন পর আমরা ওখানকার কাজ শেষ করে দেশে চলে আসি।দেশে ফিরে বাড়িতে এসে দেখি দরজা ভেতর থেকে লক করা।আমি একটু অবাক হলাম।দরজাতে লক করলাম।ভেতর থেকে একটা মেয়ের কন্ঠে শুনতে পেলাম একটু অপেক্ষা করুন।কন্ঠটা চেনা চেনা লাগল।কিছুক্ষণ পর দেখি এনা দরজা খুলল।আমি তো ভুত দেখার মত আশ্চর্য হলাম।আমার অবস্থা দেখে এনা হাসতে লাগল এবং বলল ভেতরে আসুন।
আমি :তুমি মানে আপনি এখানে কি করছেন।
এনা :তুমিটাই কিন্তু বেশি ভালো লাগে।আপনি শুনলে মনে হয়।অনেক বড় মাপের খালাম্মা হয়ে গেছি।
আমি :আমি কোন মেয়েকে তুমি বলে সম্বোধন করি না।
এনা :ছ্যাঁক খাওয়ার লক্ষণ।
আমি :Do not cross ur limit.আর আপনি এখানে কি করছেন?
এনা:sry sry sry (একটানে).আসলে হোস্টেল কিছু দিন বন্ধ থাকবে তাই এখানে ...
আমি : তা বাসায় না গিয়ে এখানে কেন।
এনা:জামাই ছাড়া বাসাই গেলে বাবা বুঝে যেত ড্যাল মে কুছ কালা হে?
আমি:ও।তা বয়ফ্রেন্ডের কাছে যেতেন।
এনা : ও তো ম্যাচে থাকে?
আমি :কি!
এনা: না মানে বাসাতে থাকলেও বিয়ের আগে তো আর একসাথে থাকতে পারতাম না ।
আমি : বুঝলাম ।আচ্ছা বাসা তো লক করা ছিল।আপনি চাবি পেলেন কই?
এনা :Actually কিছু মনে করবেন না ।আমার বয়ফ্রেন্ডকে দিয়ে তালাটা ভেঙ্গে ফেলেছি।
আমি :কি!!!আর কেউ কিছু বলেনি?
এনা: আসলে এখানকার সবাই তো জানে আমি আপনার বউ আর আমি তাদের বলেছি গ্রামে ছিলাম এতদিন।আজ সারপ্রাইজ দিতে এসেছি।তাই কেউ কিছু বলেনি।
আমি :হে ভগবান, এ কে!!!!!!!
এনা হাসতে লাগল ।
আমি :এসেছেন ভাল করেছেন ।রান্না করেছেন কিছু।
এনা :আমি রান্না করতে পারি না ।দুপুরে ও খাবার এনে দিয়েছিল।তাই খেয়েছি।
আমি:ও এখানেও ভারে মা ভবানী।আচ্ছা never mind একটা সত্যি কথা বলেন তো দুপুরে আপনার bf শুধু খাবার দিয়ে চলে গেছে তো।অন্য কিছু তো না?
এনা :অন্য কিছু? অন্য কিছু মানে?
(চোখ বড় করে ) আমাকে আপনি কি মনে করেন ।আপনি তো সুবিধার মানুষ না।
আমি : না এখন তো অনেকেই ।
এনা :কে কি করে জানি না ।আমি এমন না।আর ঔ খুব ভালো ।
আমি :বুঝলাম ।তো এখন কি করব।
এনা :কি করব মানে।আপনি কেমন পুরুষ যে একটা মেয়ের খুধা মিটাতে পারেন না।
আমি :কী......!!!!!!!!
এনা :না মানে খাবার খুধার কথা বলছি।ওই সব না।
আমি :ও।আমি তো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।ফু.......একটু দেরি করুন আমি খাবার নিয়ে আসছি।
এমন সময়ে কলিং বেলের শব্দ ।দরজা খুলে দেখি একটা ছেলে দাড়িয়ে।
ছেলেটা:আপনি?
আমি :তোমার নাম রাজু।
ছেলেটা:জী।
আমি : ভেতরে আস।
রাজু: আপনি বাপ্পী স্যার ।
আমি : হম।
রাজু: এনার কাছে আপনার কথা শুনেছি।আপনার সাথে কথা বলার খুব ইচ্ছা ছিল ।সত্যিই আপনি খুবই ভালো ।
আমি : থাক।আর সুনাম করতে হবে না।কি কর।
রাজু: ঢাবিতে ইংরেজিতে অনার্স করছি ।এবার ফাইনাল ইয়ার ।
আমি : ও।এনা যত দিন এখানে থাকবে ওর সাথে দেখা করতে এখানে আসবে না ।আর সকাল বা রাতে ফোন দিবে না।
রাজু:ঠিক আছে স্যার ।
আমি :এখন যেতে পার।
রাজু এনাকে বাই বলে চলে গেল।বাইরে বের হবার আগের মূহুর্তে ...
আমি : এনাকে বিশ্বাস কর।
রাজু :নিজের থেকে বেশি।
আমি :যাও।
এরপর এনা আমার এখানে থাকতে শুরু করল।৩/৪ দিন পর অবনী ফোন দিয়ে জানাল বিদেশের ট্যুরটা success হবার জন্য মি.রজত তার rest house এ একটা পার্টি দিয়েছে এবং আমাকে যেতে বলল।পার্টির দিন এল। অবনীর কথা আমার ঠিক বিশ্বাস হল না ।তাই কনফার্ম করতে রজত স্যারের কাছে ফোন দেই কিন্তু স্যার ফোন ধরে না ।অন্যদিকে পার্টির সময় হওয়াতে অবিশ্বাস নিয়েই পার্টিতে চলে যাই।কিন্তু পার্টিতে কাউকে দেখতে পাইনা।শুধু অবনী ছিল।(nxt part )তারপর আমরা ড্রিঙ্ক করি ।কিছুক্ষণ পর অবনী আমাকে জড়িয়ে ধরে ..........

#4
অদৃশ্য আকর্ষণের কারণেই হয়তো অবনীর পার্টিতে গেলাম।তবে মনে ছিল কিছু টা অবিশ্বাস।অন্যদিকে রজত স্যার ফোন ধরছে না।পার্টিতে গিয়ে দেখি কেউ নেই পার্টিতে।শুধু অবনী আর আমি।কাউকে না দেখে অবনীকে জিজ্ঞাসা করলাম
আমি : অন্য সবাই কই?
অবনী:রজতের একটা জরুরী কাজ পড়েছে তাই পার্টি ক্যানসেল করেছে।
আমি :ও।তাহলে আমি আসি।
অবনী :একটু অপেক্ষা করবি।
আমি :কেন?
অবনী : কিছু কথা ছিল ।
আমি :কিন্তু আমার তো নেই ।
অবনী : আমার আছে ।প্লিজ শোন।
আমি : সে অধিকার আমার নেই।
অবনী : তুমি যদি এখন আমার কথা গুলো না শোন তবে আমি আত্মহত্যা করব।
অবনীকে আমি ভালো ভাবে চিনি ও যা বলে তাই করে।তাই বাধ্য হয়ে ওকে বলতে বললাম।
অবনী : চল ড্রিঙ্কস করি ।
আমি : ভাল করেই জানিস আমি ড্রিঙ্কস করি না।
অবনী : আমি চলে যাবার পর তো করতি।
আমি :কে বলল?
অবনী : তোর সব খবর আমি রাখতাম।
এক গ্লাস wine এগিয়ে দিল।না চাইলেও আমি নিলাম এবং ড্রিঙ্কস করলাম।প্রায় 2/3 ..... পর আমি হালকা মাতাল হলাম।
অবনী : তোমার বউ তোমাকে খুব ভালবাসে না?
আমি :(personal ব্যাপার share করতে চাইলাম না ) হ্যা খুব ভালোবাসে।
অবনী : বললাম না তোর সব খবর রাখি।তাহলে মিথ্যা বলছিস কেন?তোমার বউ তো অন্য কাউকে ভালোবাসে।
আমি :that's none of ur business.
অবনী : মানে তুমি বিষয়টি জানো।আর আমি তোমাকে যত দুর চিনি তুমি ওদের হেল্প করবে তাইতো?
আমি : হ্যা করব।এনা যাই হোক প্রতারক না।
অবনী:এখনো আমার উপর রেগে আছো।আচ্ছা সব কিছু নতুন করে শুরু করা যায় না।।
আমি : মানে?
অবনী : আমাদের লাইফকে সুখে রাখা আমাদের কর্তব্য।আমাদের বিয়েটা না হয় নাই হল তাই বলে কি দুজনে চিরটাকাল দুঃখী হয়ে বাচব?
আমি :কি বলছ এসব?(দাঁড়িয়ে পড়লাম)
অবনী আমাকে জড়িয়ে ধরল এবং বলল: সব সম্পর্কের নাম তো দিতে হবে এমন নয়।তারপর আমাকে কিস করতে গেল।
কিছুক্ষণের জন্য আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।কিন্তু ও যখন কিস করতে যাই তখন ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই এবং বাসায় চলে আসি।বাসাতে ফিরে রুমে এসে কান্না করতে থাকি।হঠাত এনা এসে যাই।
এনা:আপনি কান্না করছেন কেন?
আমি :আমি কিছুক্ষণ একা থাকতে চাই।
এনা :না তা হবে না।আপনি কান্না করছেন আর আমি আপনাকে আলাদা থাকতে দেব।কি হয়েছে বলুন।
আমি :কিছু না ।আপনি চিন্তা করবেন না ।আপনাকে একা থাকতে দিন।
এনা : কি হয়েছে বলুন।আপনি বলুন কি হয়েছে।আপনি সব সময়ই কিছু গোপন করছেন।আজ আপনাকে সব বলতে হবে?
এনার জোরের কাছে হেরে গেলাম সব বললাম ওকে।সব কিছু শুনে এনা আমাকে অবনীর আসল রুপ ওর স্বামীর কাছে তুলে ধরতে বলল।আমি ও সিদ্ধান্ত নিলাম রজত স্যারের কাছে সব বলে দিব।তার আগে আমি এনাকে ডিভোর্স দিলাম।(ডিভোর্সের জন্য আগেই অ্যাপলাই করেছিলাম।ডিভোর্স পেপার টা ডয়ারেই ছিল )।হঠাৎই ডিভোর্সে সই করতে বলাই এনা অবাক হল কিন্তু ডিভোর্স সই করে দিল।কিছুদিন পর আমি রজত স্যারের সাথে দেখা করলাম।
রজত:আরে মি.বাপ্পী যে।সেদিন মিটিং এ ছিলাম তাই ফোন ধরিনি।পরে ব্যস্ততার জন্য আর ফোন দেওয়া হয় নি।শুনলাম কয়েক দিন অফিসে আসছেন না ।শরীর ঠিক আছে তো?
আমি :হ্যা আমি ঠিক আছি ।আসলে একটা কথা বলার ছিল?
রজত :কী কথা?সংকোচ করবেন না।আপনি আমার স্ত্রীর বন্ধু ছিলেন।বলুন কি বলবেন?
আমি : আসলে স্যার আমি আর অবনী শুধু ক্লাসমেট ছিলাম না।আমরা একে অপরকে ভালবাসতাম।
রজত:এসব কথা এখন আমাকে বলছেন কেন?
আমি : আসলে স্যার কিছুদিন আগে অবনী আমাকে সম্পর্কটা কনটিনিও করতে বলেছে।তাই আমার মনে হল কথাটা আপনার জানা জরুরী।
রজত:কি বলছেন এসব ।মাথা ঠিক আছে তো ।বের হয়ে যান এখনি।
আমি :আমি কিন্তু প্রমান দিতে পারি ।
রজত :প্রমান? কি প্রমাণ আছে আপনার কাছে?
আমি :একটু অপেক্ষা করুন।আগে একটু অবনীর নম্বরটা দিবেন।
রজত :নিন।তবে আপনার কথা মিথ্যা প্রমাণিত হলে কিন্তু জেলবাস করতে হবে ।
আমি :অবশ্যই।
অবনীকে ফোন দিলাম।
অবনী :আমি জানতাম তুমি ফোন দিবে।আমি জানি তুমি এখনো আমাকে ভালবাস।
আমি :হ্যা,অবনী তুমি ঠিক বলেছ।আমাদের জীবন আমাদেরকেই সুন্দর করে নিতে হবে।
অবনী :তাহলে কবে দেখা করছ?
কথা বলতে বলতে একটা কাগজে লিখলাম অবনীর কাছে ফোন দিয়ে বল আজ রাতে তুমি দেশের বাইরে যাচ্ছ।কাগজ টা রজত কে দিলাম।ও ফোন দিল।
আমি :তুমি বল?
অবনী:রজত ফোন দিয়েছে একটু ওয়েট কর?
রজত অবনী কে আমার শেখানো কথা গুলো বলল।
কিছুক্ষণ পর
অবনী :কাল রজত দেশে থাকছে না।কাল দেখা কর।
আমি :ঠিক আছে ।
ফোন কেটে দিলাম।
রজত :আমার বিশ্বাস হচ্ছে না অবনী এমন করতে পারে।আমি ওকে ডিভোর্স দিব।তুমি আমার অনেক বড় উপকার করলে।tnx.বল তোমাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
আমি :আমার কিছু লাগবে না।তবে রাজু নামের এক যুবক ঢাবি eng department এ পড়ে।আপনাকে তাকে আপনার কোম্পানির international relationship officer হিসেবে নিতে হবে ।
রজত:আমি রাজি।
তারপর রজতকে রাজুর ডিটেল দিলাম এবং বললাম পড়াশুনা শেষে ও যদি এনাকে বিয়ে করে তবেই চাকরি পাবে।রজত অবাক হলেও রাজি হল।পরের দিন অবনী হাতেনাতে ধরা পড়ল।তারপর আমি বাসায় এসে তিনটা চিঠি লিখলাম।
১ম টা মায়ের কাছে....
মা,তোমার কাছে সবচেয়ে অপরাধী আমি।তোমাকে হয়ত সবচেয়ে বেশি ভালবাসিনি তাই তোমার জন্য থেকে যেতে পারলাম না।ক্ষমা কর।আমার মৃত্যুর কারণ খুঁজতে যেও না।এনা খুব ভালো মেয়ে।ওকে নিজের মেয়ের মত করে রেখ। রাজু নামে একজন কে ভালোবাসে।ওর সাথে এনার বিয়ে দিও।এটা আমার শেষ ইচ্ছা।
২য়টা এনার কাছে....
খুব ভালো মেয়ে তুমি।একদিন তুমি আমার বন্ধু হতে চেয়েছিলে।আজ আমি তোমাকে বলছি আমার বন্ধু হবে?যদি বন্ধু ভাব তবে কথা দাও প্রতি বছর ফ্রেন্ডশিপ ডে তে একটা করে ফ্রেন্ডশিপ ব্যাচ আমার কবরে দিয়ে আসবে।আমি রাজু সম্পর্কে খবর নিয়েছি।খুব ভালবাসে তোমাকে ও।ওকে বিয়ে করে সুখে থেক।রাজুর পড়াশোনা শেষ হলে আমার বস রজতের কাছে যেতে বল।চাকরি হয়ে যাবে।পড়ে চাইলে নিজেদের ইচ্ছা মত থেক।জানি অবাক হচ্ছ।কারণ আমি বলেছিলাম আমি কোন মেয়েকে তুমি বলি না।কিন্তু আজ তোমাকে বলছি ।কারণ তুমি এর যোগ্য।
৩য়টা ছিল আমার অবনীর কাছে ......
অবনী
খুব ভালোবাসি তোমাকে।তাই তোমার এই রুপটা মেনে নিতে পারলাম না।ক্ষমা করে দিও।I LOVE YOU FOREVER.সুখে থেকো।আর পারলে শেষ ইচ্ছা টা পুরোন করে দিও"কখনো কাউকে ধোকা দিও না।"
আমি জানতাম আমার মৃত্যুর পর অবনী আসবে না।তাই চিঠিটা ওকে POST করে বাসায় ফিরছিলাম।হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী আমার উপর হামলা করে।আমাকে একটা নিরিবিলী জায়গাতে নিয়ে যাই এবং খুব মারে।কিছুক্ষণ পর অবনী সেখানে আসে।ও আমাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে এবং শেষে ২বার গুলি করে।নিজের শেষ শক্তি দিয়ে তখন আমি হেসেছিলাম।কারণ ভালবাসার হাতে মরছি।এতো অমরত্বের চেয়ে সুখের ।ওরা আমাকে ওখানে ফেলে চলে যাই।৩ ঘন্টা পর কিছু লোক আমাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।খুবই ক্রিটিক্যাল অবস্থা।১দিন icu তে মৃত্যুর সাথে লড়লাম।ততক্ষণে যে যার চিঠি পেয়ে গিয়েছে।পুলিশ আমার বাসাই খবর দিছে।অবনীও এসেছে।চিঠিটা পড়েছে ও।খুবই অনুতপ্ত।বাইরে বসে কান্না করছে।কেউ তো ওর কান্না থামাও।নইলে মৃত্যুও যে হেরে যাবে আমার কাছে।মনে হচ্ছে উঠে গিয়ে ওর কান্না থামাই।কিন্তু আজ শালা mood নেই।কে আবার প্রেমের প্যারা সহ্য করতে উঠবে।তার চেয়ে চোখ বন্ধ করে নিতেই বেশি সুখ।তবে হ্যা শেষ থেকে শুরু কিন্তু করব একদিন।আমার একদিন চোখ খুলব কোনো মায়ের ভালবাসায়,কোনো এনার বন্ধুত্বে,কোনো অবনীর চোখের জলে।



Our others topics:


Post a Comment

0 Comments