" কিছু কিছু গল্প বা কাহিনী অত্যন্ত কাল্পনিক মনে হলেও সেগুলোকে আদর্শ বলে মেনে নিতে হয় । সঠিক সিদ্ধান্ত ও মনুষ্যত্ববোধ কিছু মানুষের জীবন সুখের করে তুলতে পারে । "
ভালবাসা স্বার্থহীন
আজ ৩ মাস পর সোমা আর বিপ্লব দেখা করছে।
সোমা - যা বলার তাড়াতাড়ি বলো। আমি এখানে বেশিক্ষন থাকতে পারবো না।
বিপ্লব - কেন? আমি কি অচেনা কেউ?
সোমা - না সেটা না, তবে আমার পক্ষে বেশি ক্ষন থাকা সম্ভব নয়।
বিপ্লব - এমন কেন বলছো? তিন মাস আগে এখানেই তো আমরা কত সময় কাটাতাম।
সোমা - হ্যাঁ, তখন তোমাকে ভালোবাসতাম, কিন্তু এখন...
বিপ্লব - এখন কী? ভুলে গেছো আমাদের সাজানো স্বপ্নগুলো? এখন আর আমাকে ভালোবাসো না?
সোমা - না, এখন আর ভালোবাসি না। এই বাস্তব সত্যিটাকে তোমাকে মানতেই হবে। কারন এখন আমি আর আগের সোমা না। সমাজে আমার এখন একটা পরিচয় হয়েছে। যারা আমাকে চিনত না, তারাও আমাকে চিনেছে। এখন রাস্তা দিয়ে গেলে লোকে হা করে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে, মনে হয় আমাকে ছিঁড়ে খাবে।
বিপ্লব - সোমা.... ( কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেল )।
সোমা - একটা কথা বলবে বিপ্লব? আমি কি দোষ করেছিলাম? আমার সাথে কেন এমন হলো?
বিপ্লব চুপ করে থাকে।
সোমা - একটা কথা বলবে বিপ্লব? আমি কি দোষ করেছিলাম? আমার সাথে কেন এমন হলো?
বিপ্লব চুপ করে থাকে।
আমাদের আরও সুন্দর সুন্দর গল্প ও কবিতা পড়তে এখানে ক্লিক করুন
যদি আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তো এখানে ক্লিক করুন
ঘটনাটা ৩ মাসে আগে ঘটেছিল। রোজ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকটা ছেলে সোমাকে উত্তক্ত করতো। বাজে বাজে কথা বলতো। সোমা সেগুলো শুনেও মুখ বুজে থাকতো। পরিবারের কথা ভেবে কখনও প্রতিবাদ করে নি। বাড়িতে বয়স্ক বাবা মা। বাবার পেনশনের টাকায় সংসার চলে তাদের।
কিন্তু সেদিন আর সহ্য করতে পারে নি। ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে একজনের গালে থাপ্পড় মারে সবার সামনে। ছেলেগুলো চুপ করে যায়। যারা রোজ রোজ এই উত্তক্ত করার ঘটনাটা হা করে দেখতো, তারাও অনেক বাহবা দিল, প্রশংসা করলো, সম্মান পেল। কিন্তু সেই সম্মানটা বোধহয় কয়েক মুহুর্তের ছিল। রাতের বেলা টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোমাকে একলা পেয়ে তুলে নিয়ে যায় অন্ধকারে। ধর্ষনের শিকার হয় সোমা। ফেলে রেখে যায় অন্ধকারে। পরের দিন সকালে যখন চোখ খুললো তখন সোমা হাসপাতালের বেডে শুয়ে।যখন জ্ঞান ফিরলো, বুঝলো সব শেষ হয়ে গেছে তার। আজ থেকে সমাজ তার নামের আগে ধর্ষিতা তকমাটা লাগিয়ে দিয়েছে। সমাজে আজ তার নতুন পরিচয়। কাছের আত্মীয়গুলোও আজ তার সাথে যোগাযোগ রাখে নি।
বিপ্লব অনেকবার ছুটে এসেছে, কিন্তু সোমা নিজে থেকেই দেখা করে নি। নিজে থেকেই দূরে সরে গেছে। সমাজ তাদের সম্পর্ক মেনে নেবে না ভেবেই আর সম্পর্ক রাখে নি। ভেবেছিল বিপ্লবও হয়তো ভুলে যাবে। সেও হয়তো চাইবে না আর সম্পর্ক রাখতে।
কিন্তু বিপ্লব ভুলতে পারে নি।
বিপ্লব - আমরা কি নতুন করে শুরু করতে পারি না?
সোমা - শুরু করার তো কিছুই নেই আর। আমার তো সব শেষ।
বিপ্লব - কে বলেছে শেষ? তোমার জন্য যতটা ভালোবাসা ছিল আজও ঠিক ততটাই আছে।
সোমা - কিন্তু সমাজ? পাড়া-প্রতিবেশী?
বিপ্লব - কোন সমাজের কথা বলছো তুমি? যে সমাজ তোমাকে উত্তক্ত করার ঘটনাগুলো হা করে দেখতো। কখনও পাশে আসে নি, যে সমাজ তোমাকে রক্ষা করতে পারে নি, যে সমাজ তোমাকে ধর্ষিতা তকমা দিয়েছে। সেই সমাজের ধার ধারি না আমি।
আমাকে বিয়ে করবে সোমা?
সোমা- মানাতে পারবে তোমার মা বাবা কে?
বিপ্লব - আমি তাদেরকে বুঝিয়েছি। তারা যথেষ্ট শিক্ষিত। কোনো অসুবিধা নেয় তাদের।
*বিপ্লবকে জড়িয়ে ধরে সোমা, চোখের জলকে আটকাতে পারে নি সে। হয়তো ভালোবাসা এমনটাই হওয়া উচিত, যে ভালোবাসা কখনও সমাজের চাপে হারিয়ে যাবে না বরং আরও জোরালো হবে।*
0 Comments
Thank you so much for commenting , we hope you don't face any problem . Please subscribe 🙏 ....... If you are interested to write your story or poems , please email us